জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় শনাক্তের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর্দানশীন নারী সমাজ।বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।মানববন্ধন শেষে এ দাবি নিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মানববন্ধনে অংশ নেয়া পর্দানশীন নারীরা বলেন, শুধু পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। গত ১৬ বছর ধরে অসংখ্য পর্দানশীন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে এবং শিক্ষাক্ষেত্রেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। পরিচয় যাচাইয়ের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তারা মেনে নিতে পারেন না। তাদের দাবি, চেহারার বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাই করা হোক।
তারা বলেন, গত ১৬ বছর ধরে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাবেক কতিপয় কর্মকর্তা মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে তাদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে। এর ফলে তারা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অনেকেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। এনআইডি ছাড়া, তারা জমি বিক্রি করতে, বাসাভাড়া নিতে এবং শিশুদের স্কুলে ভর্তি করতে পারছেন না।তারা বলেন, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য তাদের চেহারা দেখতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তাদের গোপনীয়তা বা প্রাইভেসির অধিকার লঙ্ঘন করছে। পর্দানশীন নারীরা বলেন, ‘ছবি তোলার মাধ্যমে তারা গুনাহে পড়ছেন, যা তারা চাচ্ছেন না। তারা চাইছেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হোক, এবং এতে নারী সহায়কের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হোক।’তাদের দাবি, পর্দানশীন নারীদের দীনি অধিকার ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে এনআইডি প্রদান করা হোক। সেকেলে চেহারা মেলানোর পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি চালু করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে নারী সহায়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।এ বিষয়ে, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘পর্দানশীন নারী সমাজ নামক একটি সংগঠনের কয়েকজন নারী জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তসহ কয়েকটি দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাদের দাবিগুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’